একজন গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা কি খাওয়া উচিত

সাধারণত মায়ের গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ২৫% Brain Development  ঘটে। তাই গর্ভাস্থায় মা কি খাবে তার একটা  নিদিষ্ট  তালিকা অাগে থেকেই  প্রস্তুত করতে হবে ।আমাদের পরিবেশ ও খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের কারণে অভিভাবকরা প্রায়ই তাদের বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন কীভাবে বাচ্চা ব্রেনি হবে। প্রথমত চিন্তা করতে হবে গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যতালিকা কেমন ছিল কারণ গর্ভের সময় ভ্রণের মস্তিষ্কের ২৫ ভাগ ডেভেলপ হয়ে যায়, খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ, ডিম, দুধ থাকতে হবে। বাদাম বাচ্চা ও যে কোনো বয়সের আইকিউ লেভেল বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয়। জন্মের পর শিশু যখন মায়ের দুধ খায় তখন প্রসূতির খাদ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কারণ এ সময় মস্তিষ্কের বাকি ৭৫ ভাগ অংশ ডেভেলপ হয়ে যায়। সপ্তাহে দু’দিন অয়োডিনযুক্ত খাবার যেমন সামুদ্রিক মাছ খাবেন যা বাচ্চার আইকিউ তীক্ষ্ণ করে। জন্মের ৬ মাস পর বাচ্চাকে দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, সুজি, সেমাই, সাগুতে বাদাম গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চার মেধা শানিত হয়। ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ ও ধরন বাড়ালে বাচ্চার পরিপাকতন্ত্র শক্তিশালী হয়।

Pregnancy তে অতিরিক্ত ওজন না বাড়িয়ে, কি কি খাবেন কিভাবে খাবেন সেই বিষয় এ একজন অভিজ্ঞ ডায়াটিশিয়ান এর পরামর্শ গ্রহণ করুন। সন্তান যেন বুদ্ধিমান ও মেধাবী হয়- এ প্রত্যাশা সব বাবা-মায়েরই থাকে। এ কারণেই গর্ভবতী নারী শিশুর কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে চলেন।

গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার পুষ্টিকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এটি মায়ের ও শিশুর উভয়ের সুস্থতা নিশ্চিত করে। নিচে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটি সাধারণ প্ল্যান দেওয়া হলো:


সকাল (৭:০০ - ৮:০০ টা):

  1. উষ্ণ লেবু পানি বা আদা চা (চিনি ছাড়া): শরীর ডিটক্স করতে সাহায্য করে।
  2. বাদাম: ৫-৬টি কাঠবাদাম ও ১-২টি আখরোট।
  3. ফল: ১টি কলা বা ১টি আপেল।
  4. অঙ্কুরিত শস্য: ছোলা, মটর, বা মুগ ডাল ভিজিয়ে রাখা।

সকাল ৯:০০ - ১০:০০ টা:

  1. প্রাতঃরাশ:
    • রুটি বা পরোটা, সঙ্গে সবজি বা ডাল।
    • ডিম (সেদ্ধ বা ওমলেট)।
    • ১ গ্লাস দুধ (ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের জন্য)।
    • বিকল্প: ওটস বা সেরেলাক।

বেলা (১২:০০ টা):

  1. হালকা স্ন্যাকস:
    • ১ মুঠো মাখনহীন পপকর্ন।
    • ১ কাপ দই বা লাচ্ছি।
    • হাতে বানানো স্মুদি (দুধ ও ফল দিয়ে)।

মধ্যাহ্নভোজ (১:৩০ - ২:০০ টা):

  1. ভাত বা রুটি (১-২টি):
    • প্রোটিন: মাছ, মুরগি, ডাল বা সয়া।
    • শাকসবজি: লাউ, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া।
    • সালাদ: শসা, গাজর, টমেটো।
    • ১ গ্লাস মশলা-কম লেবু পানি।

বিকেল (৪:০০ - ৫:০০ টা):

  1. ফল: পেয়ারা, পেঁপে (সতর্ক মাত্রায়), বা তরমুজ।
  2. বাদাম দুধ: ১ গ্লাস।
  3. স্ন্যাকস: হালকা ভাজা চানাচুর বা বেকড স্ন্যাকস।

সন্ধ্যা (৬:০০ - ৭:০০ টা):

  1. হালকা স্যুপ: মুরগি বা সবজি স্যুপ।
  2. সঙ্গে: ১ টুকরো ব্রাউন ব্রেড বা ক্র্যাকার্স।

রাতের খাবার (৮:৩০ - ৯:০০ টা):

  1. রুটি বা ভাত (সল্প পরিমাণে):
    • প্রোটিন: ডাল বা মুরগি।
    • শাকসবজি: লাউ বা মুলা।
  2. ১ গ্লাস গরম দুধ (মধু বা হলুদ মিশিয়ে):

বোনাস টিপস:

  • পানি: প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • এড়িয়ে চলুন: কাঁচা পেঁপে, পাইনাপেল, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার।
  • বিভিন্নতা রাখুন: একই ধরনের খাবার প্রতিদিন খাবেন না।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: যদি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

এভাবে খাবারের তালিকা মেনে চললে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। 😊


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url