বাচ্চাদের পড়াশোনায় আগ্রহী করার ১০টি মজার টিপস
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করা সহজ কাজ নয়, বিশেষ করে যখন তাদের আগ্রহ কম থাকে। তবে সৃজনশীল কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। এখানে ১০টি মজার এবং কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলো, যা বাচ্চাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করতে সাহায্য করবে। এই অভ্যাসগুলো যদি আপনি সাত থেকে দশ দিন করতে পারেন তাহলে এইটি তাদের মধ্যে সখে পরিনত হবে। তারপর দেখবেন তাকে পড়তে বসো আর বলতে হবে না।
১. গেমিফিকেশন (Gamification) প্রয়োগ করুন
পড়াশোনাকে গেমের মতো করে তুললে তা বাচ্চাদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিভিন্ন অ্যাপস বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার বিষয়বস্তুকে গেমের আকারে উপস্থাপন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, পয়েন্ট অর্জন, লেভেল আপ বা পুরস্কারের মাধ্যমে বাচ্চারা আরও উৎসাহিত হয়।
২. শিক্ষার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সংযোগ করুন
যদি বাচ্চারা পড়ার বিষয়গুলো বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত করতে পারে, তবে তারা তা শিখতে আরও আগ্রহী হবে। উদাহরণস্বরূপ, গণিত শেখানোর সময় বাচ্চাদের কেনাকাটা করতে দেওয়া যেতে পারে, যা তাদের মজার অভিজ্ঞতা দেবে এবং একই সঙ্গে গণিতের দক্ষতা বাড়াবে। তাকে বাস্তবধর্মী অনেক কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট করে তুলতে হবে।
৩. ইন্টারঅ্যাকটিভ টুলস এবং টেকনোলজি ব্যবহার করুন
বাচ্চারা প্রযুক্তি পছন্দ করে। তাই ইন্টারঅ্যাকটিভ ভিডিও, অ্যানিমেশন, এবং অ্যাপস ব্যবহার করে শিক্ষার বিষয়গুলো উপস্থাপন করলে তা তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এ ধরনের উপকরণ ব্যবহার করলে বাচ্চারা বিভিন্ন বিষয় আরও দ্রুত শিখতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রে আপনাকে আরও সচেতন হতে হবে এতে যেন তারা বুদ হয়ে না যায়। টেকনোলজীতে ভালো-খারাপ দুইটা দিক আছে আপনাকে সচেতন হয়ে তাকে শিক্ষণীয় ভিডিও টিপস ও পড়াশোয় আগ্রহী এমন ব্লগ পড়তে দেওয়া যেতে পাড়ে।
৪. হ্যান্ডস-অন লার্নিং (Hands-on Learning)
ব্যবহারিক কাজের মাধ্যমে শেখা বাচ্চাদের কাছে বেশি কার্যকর। যেমন—বিজ্ঞান শেখানোর জন্য ছোটখাটো এক্সপেরিমেন্ট করতে দেওয়া যেতে পারে। এতে তারা কেবল থিওরি নয়, বাস্তবে বিষয়টি কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে পারবে। প্রতিটি বিষয় বাস্তবে কিভাবে কাজ করে তা না শেখানো হলে এই শিক্ষা বাচ্চাদের ভবিষ্যতে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পাড়বে না।
৫. রোল-প্লে এবং নাটকীয় উপস্থাপনা
পাঠ্যবইয়ের বিষয়গুলো যদি রোল-প্লে বা নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাহলে বাচ্চারা তা আরও বেশি উপভোগ করবে। এটি শুধু তাদের কল্পনাশক্তি বাড়াবে না বরং তাদের সামাজিক দক্ষতাও বৃদ্ধি করবে।
৬. রুটিন ভাঙুন এবং শিখার ধরন পরিবর্তন করুন
একই রুটিনে পড়াশোনা করলে বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই পড়াশোনার সময় বা পদ্ধতি মাঝে মাঝে পরিবর্তন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, বই থেকে পড়ার পরিবর্তে ভিডিও দেখা বা গ্রুপ ডিসকাশন করতে দেওয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র বই থেকেই যে বাচ্চারা শেখে তা নয় একদিন একটা যায়গায় ঘুরতে গিয়েও নানা কিছু শেখানো যায়।
৭. পজিটিভ রিওয়ার্ড সিস্টেম তৈরি করুন
বাচ্চারা প্রশংসা এবং পুরস্কার পেতে ভালোবাসে। তাই তাদের ছোট ছোট সাফল্যের জন্য প্রশংসা করা এবং পুরস্কৃত করা উচিত। এটি তাদের পরবর্তী কাজের জন্য আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে। আমাদের সমাজে বাচ্চাদের প্রশংসা করার প্রচলন নেই বললেই চলে, এ বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা মনেকরি সন্তানের প্রশংসা করলে সে মাথায় উঠে যাবে সত্যিকার অর্থে তা নয় । আপনাকে এ বিষয়ে সচেতনভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। এতে সে আরও আগ্রহী হয়ে উপঠবে এবং মজা পাবে।
৮. পরিবারের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন
বাচ্চারা যখন দেখে যে তাদের পরিবার পড়াশোনায় আগ্রহী, তখন তারা আরও বেশি আগ্রহী হয়। পরিবারের সদস্যরা যদি তাদের পড়ার বিষয়ে আলোচনা করে বা তাদের সঙ্গে পড়াশোনায় যুক্ত হয়, তবে এটি খুবই কার্যকর হতে পারে। আমরা পরিবারের সবাই যদি স্ক্রিনে সময় দেই তাহরে তার মনে বিপরীত প্রভাব পড়বে। সবাই মোবাইল দেখায় ব্যাস্ত আমি কেন পড়াশুনো করবো এরকম মন-মানষিকতা তৈরি হবে।
৯. নিজের গল্প শেয়ার করুন
শিক্ষক বা অভিভাবকরা তাদের নিজের শেখার গল্প শেয়ার করতে পারেন। এতে বাচ্চারা বুঝতে পারবে যে শিখতে গিয়ে সমস্যায় পড়া স্বাভাবিক, এবং সেখান থেকে কীভাবে শেখা যায়। শিখতে গিয়ে যে আপনি পদে পদে বাধাঁর সম্মুখিন হয়ে তারপর শিখেছেন সে বিষয়ে তাকে জানান তাহলে ভবিষ্যতে সে এ বিষয়ে ভয় পাবে না।
১০. সৃজনশীলতা ও মজা যোগ করুন
শিক্ষার মধ্যে যদি মজা এবং সৃজনশীলতা থাকে, তবে বাচ্চারা তা সহজে মনে রাখবে। যেমন—ছবি আঁকা, গান গাওয়া বা কবিতা লেখা দিয়ে বিষয়গুলো শেখানো যেতে পারে।
আমি আনিছুর রহমান আপনার টিপস গুলো খুব কার্যকরী
ধন্যবাদ ।